নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, চরমোনাই মাহফিল দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে নয় বরং পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই এই মাহফিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুতরাং এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আসার প্রয়োজন নেই। যদি এমন কেউ এসে থাকেন তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। গতকাল ২৪ ফেব্রুয়ারী’২১ বুধবার বাদ জোহর চরমোনাই মাদরাসার মূল মাঠসহ আশেপাশের পাঁচটি মাঠ নিয়ে অনুষ্ঠিত চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিলের উদ্বোধনী অধিবেশনের উপরোক্ত কথা বলেন পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি আরো বলেন, যারা চরমোনাইতে নতুন এসেছেন, তারা দুনিয়ার ধ্যান-খেয়াল বিদায় করে দিয়ে আখেরাতের খেয়াল-ধ্যান অন্তরে যায়গা দেন। দিল থেকে বড়ত্ব এবং আমিত্ব ভাব বের করে দিয়ে আল্লাহর কুদরতি পায়ে নিজেকে বিলীন করে দিতে হবে। সদা-সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে দিলকে তরতাজা রেখে আল্লাহর ওলী হয়ে চরমোনাই থেকে বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। পীর সাহেব চরমোনাই এবারের মাহফিলে যুবকদের ব্যাপক উপস্থিতি বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, দেশের যে কোন বড় ধরনের পরিবর্তনে যুব সমাজের ভূমিকা অগ্রগামী। সুতরাং যুব সমাজ যদি চারিত্রিক ভাবে ভাল হয়ে যায় তবে সমাজের বিদ্যমান অনাচার অবিচারের মূলোৎপাটন হওয়া সময়ের ব্যাপার। পীর সাহেব চরমোনাই তাঁর উদ্বোধনী বয়ান শেষে মাহফিলের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে স্পষ্ট বর্ণনা করেন। মাহফিলে মূল ৭টি বয়ান ছাড়াও অন্যান্য সময়গুলোতে নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন ও চরমোনাই কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, শায়েখ ফজলুল করীম রহ. এর ভ্রাতা মাওলানা সৈয়দ নাসির আহমাদ কাওছার, মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ জিয়াউল করীম সহ দেশ বিদেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরামগন গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করবেন। নির্ধারিত সময়ের প্রায় পনেরো দিন পূর্ব থেকেই মাহফিলে মুসল্লীদের জমায়েত শুরু হয়। এক সপ্তাহ পূর্বেই পাঁচটি মাঠ পূর্ণ হয়ে যায় মাহফিলে আগত মুসল্লীদের মাধ্যমে। এতে কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী চরমোনাই ইউনিয়নের বিস্তৃত একটি এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। গতকাল উদ্বোধনী বয়ানের সময় দেখা গেছে কোথায় যায়গা না পেয়ে চরমোনাই এলাকার বিভিন্ন বাগান, পুকুরপাড় এবং মানুষের বসতবাড়ির উঠোনে যায়গা নিয়েছে আগত মুসল্লীরা। মাহফিল এলাকায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ টীম মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির পরিচালনায় বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী এবং নিরাপত্তা বাহিনী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। চরমোনাই মাহফিল অস্থায়ী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাহফিলে আগত ৭ জন মুসল্লী বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন। উল্লেখ্য, ২৭ ফেব্রুয়ারী’২১ ইং শনিবার সকাল ৮ টায় আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে চরমোনাইর তিনদিন ব্যাপী মাহফিল সমাপ্ত হবে।
Leave a Reply